একটি মেসেজিং অ্যাপ হওয়ার পাশাপাশি WhatsApp প্রিয়জনদের খুঁজে পেতেও উপযোগী। হোয়াটসঅ্যাপের একটি অসাধারণ ফিচার রয়েছে, লাইভ লোকেশন। এর মাধ্যমে আপনি কোথায় আছেন সেই লোকেশন যে কোন লোকের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
তবে লাইভ লোকেশন এর অর্থ কি? লাইভ লোকেশন বলতে বোঝায়, আপনার রিয়েল টাইম অবস্থান। অর্থাৎ যদি আপনি কাউকে নিজের লাইভ লোকেশন শেয়ার করেন, সে ব্যক্তি দেখতে পাবে আপনি বর্তমানে কোথায় আছেন। আপনি স্থান পরিবর্তন করলে, ম্যাপেও সে অনুযায়ী কোথায়-কোনদিকে যাচ্ছেন তা দেখাবে।
সহজ ভাষায় একে লোকেশন ট্রাকিং বলা যেতে পারে। তবে খুব সহজ পদ্ধতিতে। এছাড়া রয়েছে কারেন্ট লোকেশন, তবে কারেন্ট লোকেশন ব্যক্তির চলাচল অনুযায়ী ম্যাপে কোনো পরিবর্তন হয় না।
আপনি কি এমনই ট্রাকিং ব্যবস্থা খুঁজছিলেন? চলুন তবে দেখা যাক কিভাবে করতে হয়।
WhatsApp লাইভ লোকেশনের ব্যবহার
হোয়াটসঅ্যাপে লাইভ লোকেশন ব্যবহারকালীন দুজনের ফোনে অবশ্যই ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে। অন্যথায় স্থান পরিবর্তন করলে ম্যাপে তা আপডেট হবে না। এছাড়া লোকেশনের সঠিকতার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ফোনের GPS এর ব্যবহার করে থাকে।
ফোন নাম্বার সেভ না করে মেসেজ পাঠাতে চান? তাহলে wame62 এই ওয়েবসাইট ব্যবহার করুন।
Live Location ব্যবহার করতে এই স্টেপগুলো অনুসরণ করুনঃ
- প্রথমে আপনার ফোনের লোকেশন অন করুন। ফোনের উপর থেকে দু আঙ্গুল দিয়ে নিচে টানলেই এই অপশনটি খুঁজে পাবেন।
- দ্বিতীয় ধাপে, সে ব্যক্তির মেসেজ খুলুন যার সাথে লোকেশন শেয়ার করতে চান। এছাড়া আপনি Whatsapp গ্রুপের মধ্যেও নিজের বর্তমান অবস্থান শেয়ার করতে পারেন।
- এবার মেসেজ লেখার পাশে Attachment আইকনে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর অনেকগুলো অপশন আসবে তার মধ্যে লোকেশন অপশনটি বেছে নিন।
- এবার হোয়াটসঅ্যাপ কে আপনার GPS লোকেশন ব্যবহারের অনুমতি দিন। Settings → Permissions → Locations → Allow. ভিডিও দেখুন
এই লোকেশন পারমিশন একবার দিলে পরবর্তীতে আর চাইবে না। অনুমতি দেওয়া হলে হোয়াটসঅ্যাপে ফিরে আসুন।
[Img: Permission Giving Gif] - এখন আপনি Share Live Location নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। এখানে ক্লিক করে নিজের অবস্থান শেয়ার করতে পারেন। আপনার বর্তমান লোকেশনকে একটি ব্লু ডট দ্বারা দেখানো হবে।
আপনি কত সময়ের জন্য নিজের লোকেশন শেয়ার করতে চান, তার জন্য অপশন রয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপে বর্তমানে তিনটি সময়সীমা রয়েছে: 15 মিনিট, 1 ঘন্টা এবং 8 ঘন্টা। এদের মধ্যে যেকোনো একটা সিলেক্ট করতে হবে।
নিশ্চিতভাবে আপনি যখন তখন লোকেশন শেয়ারিং বন্ধ করতে পারেন। কোনো সমস্যা নেই! এর জন্য Stop Sharing এ ক্লিক করতে হবে। এরপর সেই ব্যক্তি আর আপনাকে অনুসরণ করতে পারবে না।
হোয়াটসঅ্যাপ লাইভ লোকেশন এর কিছু ব্যবহার
এখানে জিপিএস ট্র্যাকিংয়ের কিছু ব্যবহার উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলি আপনিও নিজের জীবনের ব্যবহার করতে পারেনঃ
- ফ্যামিলি বা বন্ধুদের সাথে দেখা করতেঃ একটি পরিচিত বা অপরিচিত জায়গায় একে অপরকে খুঁজে পেতে অসুবিধা হলে, লাইভ লোকেশন ব্যবহার করা যেতে পারে।
- প্রিয়জনদের লক্ষ্য রাখতেঃ অনেক প্রিয়জনরা রয়েছে যারা একা বাইরে থাকে অথবা একা দূরে কোথাও যেতে হয়। তাদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে আপনি তাদের লোকেশন ট্র্যাক করতে পারেন।
- পার্সেল ডেলিভারির ক্ষেত্রেঃ আজকাল অনলাইনে আমরা অনেক কিছুই কেনাকাটা করি। ডেলিভারির সময় কুরিয়ার কোম্পানি আপনার ঠিকানা খুঁজে না পেলে লাইভ লোকেশন শেয়ার করতে পারেন।
- দোকান ও অফিসের ক্ষেত্রেঃ আপনি একজন ব্যবসায়ী হলে, কাস্টমারের সাথে লোকেশন শেয়ার করতে পারেন। এতে তারা সহজেই আপনার ব্যবসা কে খুঁজে পাবে।
পরিশেষে
হোয়াটসঅ্যাপ লাইভ লোকেশন নিশ্চিতভাবে একটি উপযোগী ফিচার যা খুব কম লোকের জানা রয়েছে। এই লোকেশন শেয়ারিং সিস্টেম end-to-end encrypted, অর্থাৎ আপনি ও যার সাথে শেয়ার করবেন এই দুজন ছাড়া WhatsApp ও আপনার লোকেশন দেখতে পাবেনা।
তা সত্ত্বেও নিজের প্রাইভেসিকে সংরক্ষণ করতে একটু সতর্ক হয়ে চলা উচিত। তাই অযথাই লোকেশন চালিয়ে রাখবেন না, এমনিতেও এতে অতিরিক্ত চার্জ নষ্ট হবে।
হোয়াটসঅ্যাপের এই ট্র্যাকিং ফিচার আপনার কেমন লাগলো কমেন্টটা অবশ্যই জানাবেন। আর যদি মনে করেন আপনার প্রিয়জনদের এই ফিচার সম্বন্ধে জানা উচিত, তবে অবশ্যই তাদের সাথে শেয়ার করবেন। 🙂